বর্ষা মাহমুদ
ব্যবসা প্রসারে ব্রান্ডিংয়ের গুরুত্ব অপরিসিম। যে সমস্ত জায়গাতে ব্রান্ডিং নাই বা হয় না সে ক্ষেত্রে পণ্য বা প্রতিষ্ঠানের প্রসার একেবারেই নগণ্য। যেকোন ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটাতে এবং পণ্যকে ভোক্তাসাধারণের কাছে পৌছে দিতে ব্রান্ডিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক কথায় ব্রান্ডিং বলতে আমরা বুঝি আমার প্রোডাক্ট সম্পর্কে মানুষকে জানানোর কৌশলগত মাধ্যম। সহজভাবে যদি বলতে চাই আমরা এমন ধরণের একটি প্রোডাক্ট বানাই বা আমার এই জিনিস আছে, এ জিনিসের এই কোয়ালিটি বিদ্যমান তা অন্যকে অবহিত করার মাধ্যমে সেই পণ্য সম্পর্কে ক্রেতা সাধারণকে আগ্রহ তৈরী করার একটি উপায়।আরো সহজভাবে বলতে পারি ব্রাডিংয়ের মূল কাজ হল ডিমান্ড তৈরি করা মানুষের মধ্যে; ডিমান্ড জেনারেশন।
অনেক ক্ষেত্রে মানুষ নিজেও জানে না তার যে কিছু ডিমান্ড আছে, মনের ভিতরেই থেকে যায়, ইনার ডিমান্ড বা প্রয়োজনীয়তা আছে বা কোথায় পাওয়া যাবে সেই পণ্য সম্পর্কে মানুষ যদি না জানে তাহলে সেই প্রতিষ্ঠানের প্রোডাক্ট কখনই চলবে না। যদি আমি জানাইতে না পারি এ ধরণের জিনিস বা সার্ভিস আছে বা কোথায় পাওয়া যাবে তবে নিশ্চয়ই আমি সেই পণ্য কিনব না। ব্রান্ডিং সেই ভিতরের আকাঙ্খা জাগ্রত করে সেই পণ্য কিনতে আগ্রহ তৈরী করে। আর এটি জানানোর জন্য বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে যে কার্য পরিচালনা করা হয় এটিই ব্রান্ডিং।
ব্রান্ডিং ডিমান্ড তৈরী করে এবং সেই ডিমান্ডকে অর্থাৎ সেই ক্রেতাকে অন্যের প্রোডাক্ট কেনা থেকে বিরত করে আমার প্রোডাক্ট কিনতে আগ্রহী করে তুলে।তাই ব্রান্ডিং নিয়ে যারা কাজ করে তাদের ব্রান্ডিং এর বিভিন্ন মাধ্যম ও প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাটা একান্ত জরুরি। ব্রান্ডিং এর কৌশল অনেকাংশের প্রোডাক্ট এর ধরণের উপর নির্ভর করে। যেমন ধরেন আপনি কি ঢ়ৎড়ফঁপঃ সেল করবেন নাকি সার্ভিস দিবেন, এটাকি আপনার কাছে আছে, নাকি অন্যের কাছ থেকে কিনে বিক্রি করবেন; অনেক ক্ষেত্রে ঢ়ৎড়ফঁপঃ যদি কনজুমার বেস্ট হয় সে ক্ষেত্রে আপনি কনজুমারকে কানেন্ট করবেন। কনজুমারের মধ্যে আবার ভাগ আছে।আপনার কনজুমার কতো টুকু শিক্ষিত, কোন পড়সসঁহরপধঃরড়হ ওরা বঝুবে, ওরা পত্রিকা পড়ে কিনা, ওরা টিভি দেখে নাকি সোস্যাল মিডিয়া বেশী ব্যবহার করে। আর যে মাধ্যমটি ব্যবহার করে সেটি সেখানে এভলেবল ব্যবহার করা যায় কি না।বর্তমান যুগে দেখা যায় অনেকেই সোস্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্ত থাকে কিন্তু এটাও সত্যি অনেক জায়গার এটা অনেকের কাছে ব্যবহার ব্যয় সাপেক্ষ এ বিষয় সমূহও বিবেচনায় আনতে হবে।আবার এমন অনেক জায়গা আছে যে সকল কনজুমার আসলে পত্রিকাও পড়ে না টিভিও দেখে না, বিল বোর্ড ও দেখে না। সে ক্ষেত্রে তাকে জানানোর কৌশল হিসেবে আমরা বিভিন্ন বাজারের সামনে বা দোকানের সামনে লোক রেখে দেই, লিফলেট রেখে দেই, মসজিদের সামনে লোক রেখে দেই যেন ওই জায়গায় আমি তাকে পৌঁছাইতে পারি।
আবার যারা কিনা শিক্ষিত লোকজন আছে তাদের জন্য আমরা পত্রিকা বিভিন্ন ধরনের মেগাজিন ওই সমস্ত এড এ যাচ্ছি। পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ব্রান্ডিং করা একান্ত জরুরি। আপনার প্র্রোডাক্টটা কেমন, কার সাথে আসলে পড়সসড়হরপধঃরড়হ করতে চান আবার অনেক ক্ষেত্রে আপনাকে পড়সসড়হরপধঃরড়হ টা তার সরহফ যেমন ঃড়ঢ় ড়ভ সরহফ এর সব সময় থাকে সে জন্য আপনাকে ৩৬০ ডিগ্রির সব কিছু করতে হবে, টিভিতে যেতে হবে আবার পত্রিকায় যেতে হবে, তার বাসায় যেতে হবে অনেক ক্ষেত্রে আমরা প্রান্তিক পর্যায়ে ব্রান্ডিং পৌছে দেয়া জরুরি হওয়া দরকার। কিছু ধরণের পড়সঢ়ধহু আছে, গ্রামের সার আবার বিভিন্ন ধরনের কিডনাশক সেল করে এরা বিভিন্ন একদম প্রান্তিক একটি উঠান বৈঠক করে। যে একটা গ্রামের মানুষজন দেখে। এটা নির্ভর করে আপনার কনজুমার এর অবস্থানের উপর। আবার ধরেন আপনার ঢ়ৎড়ফঁপঃ এর কাস্টমার নিশ্চিত সে ক্ষেত্রে র্যানডম বিজ্ঞাপন দিয়ে লাভ নাই। সে ক্ষেত্রে বি টু বি একটা বিজনেস এর সাথে অন্য বিজনেস পড়সসড়হরপধঃরড়হ, পেপার পড়হহবপঃরড়হ তৈরি করতে হবে। এবার তরুণ উদ্যোক্তা বা নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্রান্ডিং এর ব্যাপারে যে বিষটি আমার কাছে পরিলক্ষিত হয় অনেক ক্ষেত্রে যে ভুল করে তরুণ উদ্যোক্তারা ব্রান্ডিং দেখেই প্রচুর পরিমান ব্রান্ডিং করা শুরু করে বিষয়টা আসলে তা না। আসলে তার ব্যবসায়ের ইনভেস্টমেন্ট কেমন তার উপর নির্ভর করে ব্রান্ডিং এর প্লান করা জরুরি এবং তাকে চিন্তা করতে হবে প্রতিষ্ঠানের শুরুতে তাকে ব্রান্ডিং বাবদ কত টাকা খরচ করতে হবে কারণ শুরুতে ব্রান্ডিং বাবদ বেশী ইনভেস্টমেন্ট করে ফেললে পরবর্তীতে টাকার দরকার হলে তার জন্য সে কাজ সম্পন্ন করা অনেকটাই কষ্টকর হয়ে যাবে।তরুণদের ব্রান্ডিং করার পূর্বেই ভাবতে হবে বা মার্কেট রিসার্চ করতে হবে যে পরিমান টাকা ব্রান্ডিং এর জন্য ব্যয় করবে নিদিষ্ট সময় পর বাজার থেকে তার পণ্য বিক্রি করে তুলে আনতে পারবে কি না। ব্যবসা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ফিজিবিলিটি অনুযায়ী সে কনজুমারকে পড়সসড়হরপধঃরড়হ করলো, তার বিহেভিয়ার, তার কিছু লোকজন যারা এডুকেটেড আছে ওদের কে বলল বা কনজুমারকে এমন সার্ভিস দিল যে কনজুমার আরেক কনজুমারকে বলল এটাও এক ধরণের ব্রান্ডিং। ওয়াট অফ মাউথ যেটাতে অনেক বেশি ব্রান্ডিং করা যায়। তারপর দেখা গেল যে ডিজিটালি এখন বর্তমানে যুগের ডিজিটাল ছোট ছোট অনেক বেশি নড়ড়ংঃরহম করা যায়। অল্প অল্প করে। তারপর এলাকাভিত্তিক হলে তারা এলাকাতেই প্রমোশন করে তার এলাকার লোকজনকে জানানো আস্তে আস্তে তার ব্যবসা কত বড় তার ইনভেস্টমেন্ট কেমন এটার উপর আস্তে আস্তে ব্যাপক আকারে তার পণ্যের ডিমান্ড অনুযায়ী ব্রান্ডিং বাবদ বিনিয়োগ করতে হবে।ব্রান্ডিং এমন একটি জিনিস এটাতে ১মিনিটে লাখ টাকা বের হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আপনার ব্যবসার ডিমান্ড অনুযায়ী ব্রান্ডিং এর ব্যাপারে কার্যপরিকল্পনা নেয়া একান্ত জরুরি।