শহিদুল ইসলাম জি এম মিঠন, স্টাফ রিপোর্টারঃ
ঢাকার আশুলিয়া থেকে হৃদয় (২০) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকে অপহরণের পর হত্যা ও গুমের ঘটনার অন্যতম আসামী শাহীন বাবু (২৬) নামের এক যুবককে নওগাঁর মহাদেবপুর এলাকা থেকে আটক করেছে র্যাব-৫, সিপিসি-৩, জয়পুরহাট ক্যাম্প এবং র্যাব-৪, সিপিসি-২, সাভার এর যৌথ অভিযানিক দল।
অপহরণ ও গুমের পর থেকে আটককৃত আসামী নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার রামরায়পুর এলাকায় আত্মগোপন করে ছিলো। আটককৃত শাহিন বাবু নওগাঁর পোরশা উপজেলার ঘাটনগর মোল্লাপাড়া গ্রামের মোঃ মুসা আলীর ছেলে।
সত্যতা নিশ্চিত করে র্যাব জানায়, গত ০৮ মে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্র মোঃ হৃদয় নিখোঁজ হলে তার বাবা ফজলুল মিয়া আশুলিয়া থানায় জিডি পূর্বক র্যাব-৪, সিপিসি-২, সাভার ক্যাম্প বরাবর একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে তিনি বলেন, তার ছেলে হৃদয়কে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি অপহরণ করেছে এবং মুক্তির বিনিময়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেছেন। অন্যথায় ভিকটিমকে মেরে ফেলার হুমকি প্রদান করেন। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব-৪,সিপিসি-২, সাভারের গোয়েন্দা দল ভিকটিম হৃদয়ের অপহরণ রহস্য উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেপ্তার ও অপহৃত ভিকটিমকে উদ্ধারের লক্ষ্যে তৎক্ষণাৎ অভিযোগের ভিত্তিতে ছায়াতদন্ত শুরু করেন। পরে র্যাব-৪,সিপিসি-২, সাভারের গোয়েন্দা দল অপহরণকারী পরান, বাপ্পি ও তাদের অন্যান্য সহযোগীর বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে শুক্রবার পূর্ব রাত সাড়ে ১২ টার দিকে হৃদয়কে অপহরণ ও হত্যাকান্ডের মূলহোতা পরাণকে আটক করেন।
র্যাব আরো জানান, আসামী পরাণ প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার সঙ্গীয় বাপ্পি, আকাশ ও শাহীনের সহায়তায় ভিকটিম হৃদয়কে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বলে জানিয়েছেন। সে আরো জানায়, তারা দু’জন ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল পরাণ দরিদ্র হলেও তারা একই সাথে চলাফেরা করতো। এরপর হৃদয়ের পারিবারিক অবস্থা ভালো থাকায় তাকে অপহরণ করে পরিবারের নিকট হতে মোটা টাকা দাবি করার পরিকল্পনা করেন। সেই পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৮ মে দুপুুরের খাবারের পর আড্ডা দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে হৃদয়কে আটকে রেখে ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন হতে তার বাবাকে ফোন করে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও মুক্তি পণের টাকা না পেয়ে তারা সংঘবদ্ধভাবে তার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ধায় মৃতদেহ বস্তাবন্দী করে সুকৌশলে ঘটনাস্থল হতে রিকশা যোগে শ্রীপুর এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ডোবায় ফেলে দিয়ে তারা আত্মগোপন করেন।
পরবর্তীতে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তাকে র্যাব-৪,সিপিসি-২, সাভার এর নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান র্যাবের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রফিকুল ইসলাম।