ঢাকাশুক্রবার , ৯ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. এসএমই
  6. কর্পোরেট
  7. কৃষি
  8. খেলাধুলা
  9. খোলা কলাম
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. তারুণ্য
  13. নারী
  14. পরিবেশ
  15. পর্যটন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

স্বাধীনভাবে নিজে কিছু করার স্বপ্ন ছিল

Ashraful Karim
মে ১০, ২০২৩ ২:০৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!


আমি স্পর্শ হায়দার একজন নারী উদ্যোক্তা, ফ্যাশন ডিজাইনার ও মেকাপ আর্টিস্ট। টেলস অফ নকশীর স্বত্তাধিকারী।
ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল স্বাধীনভাবে নিজে কিছু করার। ক্লাস ৮/৯ থেকেই টিউশন করে যতটা পেরেছি নিজের খরচ নিজে চালিয়েছি। আব্বু আম্মু পরিবার থেকে খরচ নেয়া কেন যেন কখনই পছন্দ ছিল না।
সবসময়ই ভেবেছি পড়াশুনার পাশাপাশি আমাকে এমন কিছু একটা করতে হবে যেন পরিবার কে সময় দিয়ে কাজ ও পড়াশুনা দুটোই ঠিকমতো করতে পারি। সেজন্যই ইচ্ছা ছিল আইনজীবি বা ব্যবসায়ী হবো।
কিন্তু ২০১৮ সালে হঠাৎ আব্বুর মৃত্যুর পর সিদ্ধান্ত নেই আমাকে দ্রুত কিছু একটা শুরু করতেই হবে। কারন কেন যেন মনে হয়েছে আমার হাতে সময় খুব কম যত আগে শুরু করতে পারব ততই বাস্তব থেকে কিছু শিখব ও এগিয়ে থাকবো। ক্যারিয়ার বা উদ্যোগ যেকোন ক্ষেত্রে সময় একটা বড় ব্যাপার। পরে অনেক চেষ্টা করলেও সময় তো আর ফেরত আসবে না । আগামীর এই ৫/৬ টা বছর আমার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। সেক্ষেত্রে ব্যবসাটাই হতে পারে সবচেয়ে ভালো অপশন।
কিন্ত ব্যবসা করা তো মুখের কথা না। কি নিয়ে করবো! অনেক রিসার্চ ,বাজার সম্পর্কে সম্মক জ্ঞান,সর্বোপরি মুলধন দরকার। ভাবলাম অনেক , কোন খাতে করলে ভালো হয়?
তখন লন্ডন থেকে আমার ফুফাতো বোন জানালো জামদানী বা নকশী শিল্প নিয়ে কাজ করলে ভালো সাড়া মিলতে পারে আবার গোটা পৃথিবী জুড়েই প্রচুর চাহিদা ও আছে। আর এই দুই শিল্প বাঙালী জাতির ঐতিহ্য। কিন্তু যেকোন বিষয়ে কাজ করতে গেলে নিজেকেও ঐ বিষয়ে জ্ঞান রাখা প্রয়োজন। আপুর নিজেরও যেহেতু বিভিন্ন্ ধরনের হাতের কাজ, ম্যাটেরিয়েল, সুতোর কাউন্ট ,কালার কম্বিনেশন সম্পর্কে ভালো ধারনা আছে আপু আমাকে সবসময় পাশে থেকে ভবিষ্যতেও সহোযোগিতা করতে পারবে জানাল। আমার ও ব্যক্তিগত ভাবে শাড়ি খুব পছন্দ , চিন্তা করলাম বিয়ে দাওয়াতেও এখন শাড়ি কেউ পরতে চায় না। অনেকে জানে ও না কিভাবে পরতে হয় তাহলে এই পোষাক কেন্দ্রবিন্দুতে রেখেই দুটো শিল্পকে নিয়েই আপাতত শুরু করি, তখন আপু বললো নকশী কাজটা যেহেতু শুধুমাত্র মেয়েরাই কাজ করে তাহলে এটাকেই তুই প্রাধান্য দে । আমি ও ভাবলাম সত্যিই তো মহিলারা কিছুটা হলেও তো উপকৃত হবে।
এই চিন্তাকে পূজি করেই প্রায় ৬ মাস ধরে প্রোডাক্টের গুণগত মান, চাহিদা , উপযুক্ত বাজার মূল্য , মুনাফা , কিভাবে করলে বাজার জাত প্রোডাক্টের থেকে মাধ্যম টা একটু অন্যরকম হবে এসব নিয়ে অনেক হোমওয়ার্ক করি।
পরে আপু বললো পূজির ব্যাপার টা আপু দেখবে , শুরু তো করি । কম পূজিতে সারাবিশ্বের মানুষের কাছে সহজে পৌঁছাতে গেলে অনলাইন মাধ্যমটাই ভালো হবে চিন্তা করে ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ ওপেন করলাম অনলাইন পেইজ।
কালেক্ট করলাম নিজেদের মতো করে করানো ২০ টা শাড়ি। পূজি ছিল ৫০ হাজার টাকা।
পেইজ ওপেন করেই প্রথমেই যে বাঁধা এসেছে তা হলো আমাকে কেউ তখন জানে না চেনে না। অনলাইনে না দেখে শুধুমাত্র কথার উপর নির্ভর করে এতো বড় বাজেটের একটি প্রোডাক্ট কেন ক্রেতা নিবে? শুধু মাত্র হাতের কাজের পিওর সিল্ক শাড়ি নিয়ে খুব অল্প সংখ্যক পেইজ ওনার ছিলেন ঐ সময় ছিলেন । আর আমাদের প্রাইস রেন্জটা একটু বেশী হওয়াতে প্রধান সমস্যা তৈরী হয়েছিল। পিওর সিল্ক সবাই হাতে ধরে যাচাই করে অফলাইনে কিনেই অভ্যস্ত তখনও পর্যন্ত।
বাধ্য হয়ে আমি একটি অপশন তখন রেখেছিলাম এবং এখনও আমার ফার্স্ট বায়ার কে দেই এই অপশন ,ছবির থেকে সামনে যদি প্রোডাক্ট সুন্দর কম মনে হয় আপনি ডেলিভারীর সময় ফেরত দেবেন।
তারপর ও আমাকে প্রায় দুই মাস অপেক্ষা করতে হয়েছে অনলাইনে প্রথম অর্ডারের জন্য । তবে আজ আমার ৮০% রিপিট বায়ার। প্রোডাকট হাতে পেলে আমাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয় নি কখনও। প্রোডাক্ট রিটার্ন এসেছে এমন রেকর্ড আমার মনে পড়ে না এতো বছরে।
আমি সত্যিই চির কৃতজ্ঞ আমার ক্রেতা আপুদের ওপর । এতো অল্প সময়ে আমাকে ওনারা বিশ্বাস করেছেন বলে।
প্রথম ৬/৭ মাস আমি নিজে ডোর টু ডোর ডেলিভারী দিয়েছি । ঐ সময় টা অনেক ধৈর্য্য ধরে মাটি কামড়ে আমাকে থাকতে হয়েছে।
পুরা বাংলাদেশের সব জেলাতেই বলতে পারেন আমার প্রিয় আপুরা প্রোডাক্ট নেন।
ইউ কে , ইটালী , ফ্রান্স , ইউএস .এ , কানাডা এসব দেশের অনেক প্রিয় আপুরা বারে বারে অর্ডার করে শাড়ি নিয়েছেন ।
সর্বোপরী আমার শিল্পী বোনেরা যেখানে ৯৯% ই মহিলা শিল্পী কাজ করছেন। আমি নিজে ও মহিলা যিনি কিনছেন উনিও মহিলা। এই শুরু ও শেষের দুই শ্রেণীর সকলের প্রতি আমার আস্হা ভালোবাসার অনুভুতি অন্যরকম । ওনারা না থাকলে আমি শূণ্য । ওনাদের জন্য আমি এটুকু এগোতে পেরেছি।
আর অবশ্যই আমার ফুফাতো বোনেদের আমার মেজ ফুপী ,খালা , চাচী সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ কারন এই কাজটা আমার প্যাশন এটা আমার ভালো লাগার জায়গা। আমি বলতে পারেন ঘুমিয়ে ঘুমিয়েও স্বপ্ন দেখি এই কাজ করছি। তাই সবার সাপোর্ট সাজেশন যখন পাই ভালোলাগা টা ভালোবাসায় পরিনত হয়। মনে সাহস আসে।
আমার ভবিষ্যত পরিকল্পনা শুধুমাত্র হাতের কাজের শাড়ির ওপর এমন একটি বড় আকারের স্টুডিও করবো যেখানে আমি ক্রেতার মন মতো কাস্টোমাইজড হাতের কাজের শাড়িই শুধু করাতে পারবো । কাস্টোমাইজড কাজ আমি এখন নেই না কারন অনেক প্রেসার আর অনেক লোকবল দরকার তাই । এই কনসেপ্টে বড় পরিসরে বাংলাদেশে ওরকম কাজ হয় বলে আমার এখনও জানা নেই।
সব থেকে ভালো লাগে ব্যবসায় করতে গিয়ে কখনো আমি ডিজাইনার, কখনো ফটোগ্রাফার, কখনো প্রেজেন্টার, মডেল বা মেকাপ আর্টিস্ট। ব্যবসায়ের সুবাদে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের কাজ আমার করতে হয়।
স্পর্শ হায়দার। স্বত্তাধিকারী – টেলস অফ নাকশি।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
%d bloggers like this: