ঢাকাশুক্রবার , ৯ই জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. এসএমই
  6. কর্পোরেট
  7. কৃষি
  8. খেলাধুলা
  9. খোলা কলাম
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. তারুণ্য
  13. নারী
  14. পরিবেশ
  15. পর্যটন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বহু চড়াই-উৎরাই পেরিয়েই সফলতার মুখ দেখতে পাই

Ashraful Karim
মে ১০, ২০২৩ ১:৫৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!


আসসালামু আলাইকুম, আমি শাহনাজ পারভীন (চুমকি), আমার বাবা খুব শখ করে রেখেছিলেন আমার নাম চুমকি। একদিন হাজারো আকাশের তারার মাঝে জ্বলজ্বল করবে তার মেয়ে।
স্বপ্ন দেখি আকাশ ছোঁয়া , তাই স্বপ্নকে ছুঁয়ে দেখতে পা বাড়িয়েছি এক অজানা পথে। যে স্বপ্ন দেখতে জানেনা, সে কখনো তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবে না । আজ আমার স্বপ্ন আমাকে মাথা উঁচু করে বাঁচার পথ খুঁজে দিয়েছে ।
প্রতিটা উদ্যোক্তাদের জীবনে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পিছনে কিছু গল্প থাকে, বিশেষ করে আমরা যারা নারী উদ্যোক্তারা আছি, অনেক রকম বাধা-বিপত্তি, চড়াই-উৎরাই পেরিয়েই সফলতার মুখ দেখতে পাই।
একটা সময় ছিল যখন আমি নিজেকে খুবই সাধারণ একটা মেয়ে বলে মনে করতাম , সব সময় মনে হতো আমাকে দিয়ে হয়তো কিছুই হবে না , পড়াশোনায় ও খুব মেধাবী ছিলাম না কিন্তু চেষ্টা করতাম মনে প্রাণে , যখন যেই কাজটাই করতাম মন প্রাণ দিয়ে করতাম ভালবেসে করতাম । খুব এক্সিলেন্ট রেজাল্ট না হলেও , আমার আগ্রহ এবং চেষ্টা দেখে টিচারাও আমাকে অনেক ভালোবাসতো । স্বভাব গত ভাবে আমি ছিলাম বাবা মায়ের খুবই বাধ্য এবং শান্ত স্বভাবের । আমি বিশ্বাস করি যে কোন কাজ ভালোবেসে করলে সেটা কখনো বিফলে যায় না ।
আমাদের চার ভাই বোনকে রেখে হঠাৎই একদিন আমার মা চলে গেলেন পরপারে ।? খুব ছোটবেলায় আমরা আমাদের মাকে হারিয়েছি , তাই একমাত্র ভরসার জায়গা ছিল আমার বাবা । আমার বাবা ছিল প্রচণ্ড মেধাবী ,কর্মঠ এবং নিজের উপর আত্মবিশ্বাস ছিল প্রবল । পেশাগতভাবে তিনি ছিলেন একজন অভিজ্ঞ ডাক্তার। আমার বাবা সব সময় বলতেন নিজের কাজগুলো সব সময় নিজেই করার চেষ্টা করো , খুব প্রয়োজন ছাড়া কারো হেল্প নেয়ার চেষ্টা করো না , কারো হেল্প নিয়ে কাজ করলে তুমি তার কাছে সারা জীবনের জন্য ঋণী হয়ে থাকবা , এই ঋণ কখনো শোধ করা যায় না । তাই যতটুকু সম্ভব নিজের কাজ গুলো নিজেই করার চেষ্টা করো । বাবার এই কথাগুলো আমার অন্তরে বিধে গিয়েছিলো । বাবার মত আমারও নিজের উপর আত্মবিশ্বাসটা ছিল সব সময় একটু বেশি । তাই আমিও চেষ্টা করি নিজের কাজগুলো নিজেই সামলিয়ে নিতে। আজকে তাঁরা কেউই আর বেঁচে নেই , কিন্তু বেঁচে আছে তাদের আদর্শ , তাদের ভালোবাসার ফসল ।
আমার উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প :
ছোটবেলা থেকেই আমার হাতের কাজের উপর আগ্রহ ছিল খুব বেশি । সব সময় কিছু না কিছু নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম । আমার মাকে দেখতাম বিভিন্ন রকম হাতের কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতে কাজের ফাঁকে কিংবা গল্প করতে করতে সুন্দর সুন্দর জিনিস তৈরি করে ফেলত , রান্নাতেও ছিল তার ভীষণ দক্ষতা । ডেজার্ট আইটেমে তিনি এক্সিবিশনে ফার্স্ট ও হয়েছিলেন । এগুলো দেখতে দেখতে আমার মধ্যেও কাজের প্রতি একটা আগ্রহ জন্মে গিয়েছিলো । পরিবার থেকে আমরা যেই শিক্ষা অর্জন করি সেগুলো হলো পারিবারিক শিক্ষা যা আমাদের জীবনে কোন না কোন ভাবে প্রভাবিত হয় । বাবা-মা
হলো আমাদের সব থেকে বড় শিক্ষক , পরিবারের শিক্ষাই সব থেকে বড় শিক্ষা । শুধু পুঁথিগত বিদ্যা অর্জন করে কখনো বড় হওয়া যায় না ?, প্রকৃত মানুষ হতে হলে সবার আগে দরকার সঠিক মূল্যবোধ । যা আমরা পরিবার থেকে ই পেয়ে থাকি।
মার মৃত্যুর পর তার স্মৃতিগুলো আঁকড়ে ধরেই তার প্রতিভা গুলোকে মাথায় রেখে আমিও বিভিন্ন রকম হাতের কাজ দিয়ে শুরু করেছিলাম আমার উদ্যোক্তা জীবন । বিভিন্ন রকম কারচুপির কাজ , ব্লক বাটিক এগুলো দিয়ে শুরু করেছিলাম । পরবর্তীতে , মরণঘাতী করোনার সময় যখন মানুষ বাসা থেকে বের হতে পারতো না , তখন আমি চিন্তা করলাম এমন কি করা যায় , যেটাতে আমি মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি , তখন আমার মনে হল ,যে প্রোডাক্টগুলো নিত্যদিনে আমাদের প্রয়োজন হয় , সেই ধরনের কিছু পণ্য আমি যদি মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে পারি , তাহলে সবাই একটু উপকৃত হবে ,স্বস্তি পাবে । সেই থেকে শুরু হলো অনলাইনে নিত্য প্রয়োজনীয় পন্যের সমাহার নিয়ে আমার নতুন যাত্রা।
আর একজনের কথা না বললেই নয় , তিনি হলেন আমার হাজবেন্ড । আজকে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা এবং তার অনুপ্রেরণাতেই আমি আমার উদ্যোক্তা জীবন সফলভাবে এগিয়ে চলার সাহস এবং শক্তি পেয়েছি । পরিবারের প্রতিটা সদস্যের কাছে আমি কৃতজ্ঞ কারণ আজকে তারা আমার পাশে না থাকলে আমি কখনোই সফল হতে পারতাম না ।
আমি কাজ করছি আমাদের ঐতিহ্যপূর্ণ এবং মানসম্মত দেশীয় পণ্য নিয়ে।
আমার উদ্যোগ : খাঁটি সরিষার তেল ও নারিকেল তেল , শ্রীমঙ্গলের বেস্ট কোয়ালিটি চা পাতা , কুমারখালী বিখ্যাত গামছা ও বিভিন্ন ধরনের চাদর দিয়ে। আমার নতুন সংযোজন : এতদিন জেনে আসছি গামছা শুধু মোছার মুছির কাজেই ব্যবহার হয় তাই না ? আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন এই গামছা দিয়ে বিভিন্ জিনিস তৈরি হচ্ছে । সম্প্রতি আমি এই গামছা দিয়ে ই গহনা তৈরির কাজ শুরু করেছি । একটু বুদ্ধি খাটালে খুব সাধারণ সাধারণ জিনিস দিয়েও কিন্তু অসাধারণ কিছু তৈরি করে ফেলা যায় । আমি চাই আমাদের দেশের এই ঐতিহ্য গুলো দেশ-বিদেশে সবখানে ছড়িয়ে পড়ুক , এর ব্যবহার সম্বন্ধে সবাই জানুক এবং এগুলো ব্যবহার করুক। আলহামদুলিল্লাহ আমার হাতে তৈরি জুয়েলারি তিন তিনবার দেশের বাইরে পৌঁছাতে পেরেছি। ইনশাআল্লাহ সকলের দোয়া এবং সহযোগিতা পেলে একদিন এভাবেই আস্তে আস্তে আমি সফলতার শীর্ষ পৌঁছে যেতে পারবো।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
%d bloggers like this: