প্রতিবেশীরা অতিস্ট : ঘর ভাংচুর, প্রতিবাদে
সংবাদ সম্মেলন
মোংলা শহরতলীর সিগনাল টাওয়ার এলাকার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক কামাল হোসেন দম্পত্তির বাড়ি ঘর ভাংচুর ও সম্পত্তি আত্মসাতের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে মঙ্গলকবার দুপুরে মোংলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ও মানব বন্ধন করেছেন ভূক্তভোগীর পরিবারসহ এলাকাবাসি। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চিকিৎসক কামাল হোসেন দাবি করেন, নগদ টাকা দিয়ে জমি ক্রয় করে বসতঘর তুলে তিনি তার পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন। এক পর্যায়ে জমির আগের মালিক ইউছুপ হাওলাদার আদালতে দলিল বাতিলের দাবিতে একটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলাকে পুঁজি করে ইউছুপ হাওলাদারের ছেলে মোজাম্মেল হোসেন হিমেল, পুত্রবধূ মাসুদা আক্তার নিশি ও তাদের সহযোগীরা কয়েক দফায় চিকিৎসকের বাড়ি ঘর ভাংচুর, লুটপাট চালানোসহ নানা চক্রান্ত চালিয়ে আসছে। সর্বশেষ এ চক্র ঢাকায় গিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে। সেখানে তাদেরসহ মোংলা থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ উত্থাপন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে কামাল হোসেন দাবি করেন, কুচক্রী মহলের ইন্ধনে ওসির বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ওই হেমিওপ্যাথিক চিকিৎসক অভিযোগ করেন বলেন, নিজের ও স্ত্রীর পৈত্তিক ভিটামাটি বিক্রি করে বছর তিনেক আগে মোংলা পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের সিগনাল টাওয়ার মসজিদের সামনে জনৈক ইউছুফ হাওলাদারের কাছ থেকে বাজার মুল্যে ১০ শতক জমি ক্রয় করি। পরবর্তীতে সেখানে বসত ঘর তুলে বসবাস শুরু করি। এরই মধ্য উক্ত ইউছুফ আলী শারিকভাবে অসুস্থ্য ও চিকিৎসার জন্য নগদ টাকার প্রয়োজন হলে তার নিজ নামীয় স্থাপনা সহ আরও ১৩ শতক জমি বিক্রির প্রস্তাব দিলে বাজারমূল্য যাছাই করে তিনি উক্ত জমি আমার/ স্ত্রীর নামে কবলা দলিল ও সমুদয় অর্থ বুঝে নিয়ে স্থাপনা / ঘর খালি করে দেয়ার জন্য এক সপ্তাহ সময় নেয়। আমি সরল বিশ্বাসে অপেক্ষায় থাকার পর বিষয়টি তার (ইউছুফ) হিমেল ও পূত্র বধুকে অবহীত করি। এতে তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে কয়েক দফায় পার্শবতী আমার ঘর ভাংচুর, লুটপাট করে। এমনি কি আমার স্ত্রী পূত্র তাদের হামলা মারধরের শিকার হন।
তিনি আরো বলেন,শুধু হামলা, মারধর ও লুটপাটই নয়। ইউছুফ পুত্র ও তার স্ত্রী সহ আমাকে আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ সহ আমার কবলাকৃত সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে নানা চক্রান্তে লিপ্ত হয়। সম্প্রতি প্রকাশ্য আমার বাড়ির আঙ্গীনার বিভিন্ন প্রজাতির ফলজ গাছ কেটে বিনস্ট করে। পরে তার বাবা ইউছুফ ও আত্মীয় স্বজন এবং প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পারি হিমেল একজন দূস্কুতকারী ও চিহ্নত মাদক ব্যবসায়ী। তার মারধরের শিকার হয়ে বাবা ইউছুফ হাওলার অন্যত্র বনবাস করেন। মাদকাসক্ত হিমেলের অত্যচারে অতিস্ট হয়ে তার স্ত্রী কন্যা সন্বিতান সহ গত কয়েকমাস কুমিল্লায় পৈত্তিক বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। সেখানে স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় মাদকাসক্ত হিমেল জেল-হাজত খেটে স্ত্রী সন্তান নিয়ে সম্প্রতি মোংলার সিগনাল টাওয়ারে ফিরে আসে। এখানে এসে সে আমার ও আমার পরিবার পরিজনের উপর হিংসাত্মক আচরন শুরু করে। প্রতিনিয়ত নেশার টাকা দাবি করে। অন্যথায় ক্রয়কৃত জমি ও বাড়িতে বসবাস করতে দিবে না বলে নানাভাবে জীবন নাশের হুমকি দেয়। গত ৫ ডিসেম্বর হিমেল ও তার স্ত্রী ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। প্রতিনিয়ত তাদের মারমুখী আচরনে আমার বাড়িতে থাকা ভাড়াটিয়া ভয়ে আতংকে গৃহবন্দি থাকতে বাধ্য হচ্ছে। কারনে অকারনে গালমন্দ সহ মাদকাসক্ত হিমেল রাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘরের চারপাশে ঘেরা ফেরা করে। ঘরের জানলা, দরজায় আঘাত করে ভ্রিতির সঞ্চার করে। এ বিষয় স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের অবগত করে নিরপয় হয়ে আইনের প্রতিশ্রদ্ধাশীল হয়ে স্থানীয় থানায় সাধারণ ডায়রী সহ একাধিক লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। আইন শৃংখলা রক্ষার স্বার্থে মোংলা থানার ওসি মোহাম্মাদ মনিরুল ইসলাম আমাদের উভয়কে ডেকে সহনশীল অবস্থা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছেন একাধিকবার। একটি কথা না বললেই নয় যে, আমার পৈত্তিক সম্পত্তি বিক্রি ও পরিবারের কস্টে অর্জিত অর্থে শান্তিশৃংখল বসবাসের জন্য উক্ত জমি ক্রয় করেছি। সেখানে পুলিশের ওসি মনিরুল ইসলাম কিংবা অন্য কাউকে ঘুষ উপটোকন দেয়ার প্রশ্ন ওঠে না। ওসি মনিরুল ইসলাম ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের আইনশৃংখলা রক্ষায় নজরদারী থাকায় আমি ও আমার পরিবার জীবন নাশের শংকার মধ্যেও মানবেতর জীবন যাপন করছি।
জনাকীর্ন এ সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বাগেরহাট পুলিশ সুপারের কঠোর দিক নির্দেশনায় মোংলা থানার ওসি মাদক ও চোরাচালান সহ অপরাধ প্রবনা কঠোর হস্তে দমন করেছেন। আর এ অপরাধীরা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে মাদকাক্ত হিমেল ও তার পরিবারকে ব্যবহার করছে। আমার অসহায়ত্বকে পুঁজি করে ওসি মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর মতো মিথ্য অপবাদ উত্থাপন করে হিমেলের স্ত্রী সোমবার ঢাকা ক্রাইম রিপোটার্স ইউনিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। হিমেল পরিবার ও স্বার্থন্বেশীদের উদ্দেশ্য যাতে ওসি মনিরুল ইসলাম মোংলা হতে বদলী হলে চোরাকারবারি, মাদক ব্যবসায়ী, অপরাধী চক্র ও পর সম্পদ লোভীরা আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠবে। আর তাদের অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হলে আইনের শাসন অপরাধীদের কাছে বৃদ্ধাঙ্গুলী সহ স্থানীয় আইনশৃংখলা ভেঙে পড়বে। একই সঙ্গে আমি ও আমার পরিবার চরম ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি জীবন নাশের শংকায় পড়বে।
সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রেস ক্লাবের সামনে বিপুল সংখ্যক এলাকাবাসি মানববন্ধন করে চিকিৎসক দম্পত্তির ওপর হামলা, বাড়ি ঘর ভাংচুরসহ ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন ও তাদের বিরুদ্ধে চক্রান্তের প্রতিবাদ জানান। #