ঢাকারবিবার , ২রা এপ্রিল, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. এসএমই
  6. কর্পোরেট
  7. কৃষি
  8. খেলাধুলা
  9. খোলা কলাম
  10. জাতীয়
  11. তথ্যপ্রযুক্তি
  12. তারুণ্য
  13. নারী
  14. পরিবেশ
  15. পর্যটন
আজকের সর্বশেষ সবখবর

গজনী অবকাশ কেন্দ্র
পাহাড়ে প্রকৃতির শোভা নতুন রূপ নান্দনিক কারুকাজে

Ashraful Karim
মার্চ ৯, ২০২৩ ১১:৪২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!


নিজস্ব প্রতিবেদক
শেরপুর সীমান্তের গজনী অবকাশ পর্যটন কেন্দ্র প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আর নান্দনিক কারুকাজে নতুন রূপ পেয়েছে। ঝিনাইগাতী উপজেলায় গারো পাহাড়, নদী আর ঝরণায় গড়ে ওঠা এ পর্যটন কেন্দ্রের আগের রূপ অনেকটাই বদলে গেছে। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে প্রতিদিন ভ্রমণপিপাসুদের ঢল নামছে সেখানে। ইতোমধ্যে পাহাড়ি সৌন্দর্যের সঙ্গে যোগ হয়েছে কৃত্রিমভাবে নির্মাণ করা অবকাঠামো আর মনোমুগ্ধকর নানা ভার্স্কর্যসহ বিনোদনের অনেক কিছু।
পর্যটকরাও বলছেন, আগের তুলনায় অনেকটাই বদলে গেছে। সম্প্রতি উদ্বোধন করা হয়েছে গজনী অবকাশের লেকে দৃষ্টিনন্দন ভাসমান সেতু, লেকের পাশে সুবিশাল ওয়াটার কিংডম ও একটি প্যারাট্রবা (চরকি)। এছাড়া ঝুলন্ত ব্রিজ, ক্যাবল কার, জিপলাইনিং তো রয়েছেই। চোখে পড়ার মতো সব কিছু দেখে মুগ্ধ পর্যটকরাও। সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে পর্যটক, ইজারাদার, দোকান মালিক ও প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এসব তথ্য।
জানা যায়, শেরপুর জেলা শহর থেকে গজনী অবকাশ কেন্দ্রের দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার। বাস

ও মাইক্রোসহ যে কোনো যানবাহনে আসা যায় এই অবকাশে। অপার এ সৌন্দর্যের অবকাশ কেন্দ্রটি ১৯৯৩ সালে ৯০ একর জমিতে গড়ে তোলে জেলা প্রশাসন। নির্মাণের পর থেকেই প্রতিবছর জীবনের ব্যস্ততাকে পেছনে ফেলে এখানে ছুটে আসেন লক্ষাধিক পর্যটক। গজনী অবকাশ ঘেঁষা উত্তরে মেঘালয় রাজ্যের পোড়াকাশিয়া। অবকাশের চারদিকেই ছোট বড় অসংখ্য টিলা। প্রতিটি টিলা যেন সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি। অবকাশে যেন অবারিত সবুজের সমারোহ।
গারো পাহাড়ের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন গজনী অবকাশ। এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটছে। জমে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্র গজনী অবকাশ। সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, গজনী অবকাশের চারদিকে গারো পাহাড়। নিঝুম অরণ্য। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি গজনী অবকাশকে আগের চেয়ে আরও অপরূপ সাজে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। এমনিতেই এর নান্দনিক দৃশ্যে মনকে করে তোলে আবেগ আপ্লুত।
আশপাশে সবুজে ঢাকা শাল, গজারি, সেগুন আর নানা প্রজাতির গাছপালা। পৃষ্ঠা ২ কলাম ৩
পাহাড়ে প্রকৃতির
প্রথম পৃষ্ঠার পর
অসংখ্য টিলা আর লতাপাতায় হয়ে উঠেছে অপরূপা। প্রকৃতি প্রেমীদের মনে দোলা দেয় নিশ্চিন্তে। এই নৈসর্গিক গজনীকে গত এক বছরে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সাঁজানো হয়েছে আরও নতুন রূপে। পাহাড়ের বুক জুড়ে নির্মাণ হয়েছে সুদীর্ঘ ওয়াকওয়ে। পায়ে হেঁটে নেয়া যাবে পাহাড়ের স্পর্শ। লেকের পাড় দিয়ে হেঁটে যাওয়া যাবে এক পাহাড় থেকে আরেক পাহাড়ে। চূড়ায় তৈরি হয়েছে প্রাকৃতিক জলপ্রপাত। নিচে পাথরের স্তূপ। পাথরের ওপরে বসে জমে বন্ধু বান্ধবীদের আড্ডা।
ওয়াকওয়ে আর লেকের পাশে মিনি চিড়িয়াখানা। এখানে আনা হয়েছে মেছো বাঘ। সেই সঙ্গে যোগ হয়েছে অজগর সাপ, হরিণ ও বানরসহ ৪০ প্রজাতির প্রাণী। ঘুরে বেড়ানোর জন্যে সাম্পান নৌকা। গল্প আর গানে পর্যটকদের মনে জায়গা করবে এক অন্যরকম অভিজ্ঞতা। পড়ন্ত বিকেলে এখানকার দৃশ্য হয়ে ওঠে আরও মনোমুগ্ধকর। যা মনের স্মৃতি ফলকে জেগে থাকবে অনেক দিন।
পাহাড়ের চূড়ায় রয়েছে গারো মা ভিলেজ। যার ছোঁয়ায় ফুটেছে নতুনত্ব। পাশেই মাশরুম ছাতা।
নিচে পাখি বেঞ্চে বসে জানা যাবে আদিবাসীদের জীবনযাত্রা। দেখা যাবে দিগন্তজুড়ে ধান ক্ষেত আর উঁচু নিচু অসংখ্য পাহাড়ি টিলা। চোখে পড়বে পাহাড়ি জনপদ। সহজেই উপভোগ করবে এদের জীবনমান। শিশু দর্শনার্থীদের রয়েছে নানা কারুকার্য আর বিনোদন। রয়েছে চুকোলুপি চিলড্রেন পার্ক। পাশে শিশু কর্নার। এখানেই প্রদর্শিত হচ্ছে পর্যটনের আনন্দে, তুলসীমালার সুগন্ধে-শেরপুর স্লোগানে জেলা ব্র্যান্ডিং কর্নার। জেলা ব্র্যান্ডিং এ কর্নারে থাকছে শেরপুরের ইতিহাস ঐতিহ্য সংবলিত ছবি, বই ও ভিডিও চিত্র। জেলা ব্র্যান্ডিং তুলসীমালা চালের নিদিষ্ট স্থান।
এবার গজনী অবকাশকে আরও আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে আনা হয়েছে চমকপ্রদ নতুন নতুন উদ্যোগ। এর মধ্যে মন কেড়েছে কেবল কার। ভ্রমণপিপাসুরা ক্যাবল কার দিয়ে ঘুরছেন এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। এছাড়াও ঝুলন্ত ব্রিজ, ভাসমান ব্রিজ, রুফওয়ে, প্যাডেল বোট ও সাম্পান নৌকা। এসব কিছুই মনকে নাড়া দিচ্ছে দর্শনার্থীদের। ভিন্ন মাত্রায় নিত্যনতুন সংযোজনে শীতের শুরু থেকেই বেড়েছে পর্যটকদের সংখ্যা।
পাহাড়ের বন বাগানের সারি সারি বৃক্ষ, লাল মাটির উঁচু পাহাড়, গহীন জঙ্গল আর পাহাড়ের কান্নার ছন্দ তোলা ঝরণা পর্যটকদের আকৃষ্টের মাঝে যোগ হচ্ছে নতুন মাত্রা। প্রকৃতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সংযোজন হয়েছে কৃত্রিম স্থাপনা ও ভাস্কর্য। মৎস্য কন্যা বা জলপরী, ডাইনোসর, ড্রাগন ট্যানেল, দ-ায়মান জিরাফ, পদ্ম সিঁড়ি, লেক ভিউ পেন্টাগন, হাতির প্রতিকৃতি, স্মৃতিসৌধ, গারো মা ভিলেজ, ওয়াচ টাওয়ারসহ সবই অন্যতম। রয়েছে ক্রিসেন্ট লেক।
লেকের ওপর রংধনু ব্রিজ, কৃত্রিম জলপ্রপাত, শিশু পার্ক, কবি নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিফলক। এছাড়াও রয়েছে মাটির নিচ দিয়ে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে যাওয়ার জন্য ড্রাগন টানেল। এর মুখে পাতালপুরী, লাভলেইন আর কবিতাবাগ। অবকাশের অন্যতম আকর্ষণ সাইট ভিউ টাওয়ার। এর উচ্চতা ৮০ ফুট। এর ওপর থেকে দেখা যায় মেঘালয়ের অনেক কিছু। নিচে দেখা যায় পাহাড়ি টিলার বৈচিত্র্যময় অপরূপ দৃশ্য।
গজনী অবকাশে ইতোমধ্যে স্থাপন করা হয়েছে মানসম্মত খাবার হোটেল। গারো পাহাড় ঘুরে ক্লান্ত হলে পাবেন কোমল পানি, কফি, ফাস্টফুড ও দুপুরের খাবার। এছাড়াও আগতদের জন্যে রয়েছে রান্নার সুব্যবস্থা। শীতের পদচারণার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে পর্যটকদের সংখ্যা। প্রতিদিনই আসছে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকরা। এখানে ঘুরতে আসা পর্যটক শিউলী ম্রং, রনিতা মৃ, মঙ্গল সাংমা, সজিব মিয়া ও আনোয়ার হোসেনসহ অনেকের সঙ্গে কথা হয়। তারা বলেন, এসেছি মধুপুর থেকে। এখানে এসে ধারণাটাই পাল্টে গেছে।
এখানকার সৌন্দর্য দেখে মন ভরে গেছে। ফিরে গেলেও এখানকার মনোরম দৃশ্য কখনই ভুলবো না। তাদের মতে, এখানে নিরাপত্তার ব্যবস্থাও ভাল। মন খুলে বেড়ানো যায়। তারা আরও জানান, তারা আগেও এসেছেন। তবে এতো সুন্দর ছিল না। এটিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে কিছু কারুকার্য করায় সৌন্দর্যে যোগ হয়েছে নতুন মাত্রা। তবে মধুপুর থেকে আসা নাট্যকার ফরহাদ আলী আক্ষেপ করে বলেন, এখানে থাকার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই। আবাসিক হলে একদিন ভোরের সূর্যটা দেখা যেত।
দেখতে পারতাম আরও অনেক কিছু।
এ বিষয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার বলেন, শেরপুরের গজনী অবকাশ ভ্রমণপিপাসুদের কাছে খুবই পছন্দের একটি জায়গা। ‘পর্যটনের আনন্দে, তুলসীমালার সুগন্ধে শেরপুর’ এ জেলা ব্র্যান্ডিং শ্লোগানকে সামনে রেখে পর্যটনের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন নতুন স্থাপনা ও বিভিন্ন রাইড সংযোজনের মাধ্যমে গজনী অবকাশকে পর্যটক ও ভ্রমণপিয়াসীদের নিকট আরও আকর্ষণীয়ভাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, পর্যটকদের রাতযাপনের জন্য মোটেল তৈরি ও ট্যুরিস্ট পুলিশের প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাব পাস হলেই রাত যাপনের সুযোগ হবে পর্যটকদের।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।
%d bloggers like this: