রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশুনা করা ছেলে তার বাবাকে হত্যা করার পর নিজেই থানায় গিয়ে বাবাকে হত্যার কথা জানালেন পুলিশকে। ছেলের দেওয়া তথ্যমতে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে উদ্ধার করলো মৃতদেহ। ছেলে কর্তৃক বাবাকে হত্যা করে হত্যাকারী ছেলে নিজেই থানায় হাজির হয়ে পুলিশের কাছে হত্যার দায় শিকার করে আত্মসমর্পন করার ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার পূর্বরাতে ঠাকুরগাঁও জেলা সদর পৌর শহরের শান্তিনগর মহল্লায়।
ঐ মহল্লায় বসবাসরত ফজলে হক (৭০) কে তার ছেলে গোলাম আজম (২৯) দেশীয় অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে হত্যা করার পর ছেলে গোলাম আজম রাতেই ঠাকুরগাঁও সদর থানায় হাজির হয়ে পুলিশকে জানায় যে, সে নিজেই তার পিতা ফজলে হক কে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এসময় থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাথমিক সুরতহাল রিপোর্ট অন্তে ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহ উদ্ধার পূর্বক ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন।
প্রতিবেশী স্থানিয়রা জানায়, গোলাম আজম রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট) এ সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশুনা শেষ করেছেন। পারিবারিক বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে বাবা ও ছেলের মধ্যে মাঝের মধ্যে বিবাদ হতো। বিবাদের কারনে ঘরের ভেতরে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে থাকতে পারেন বলেও ধারনা পোষন করেছেন স্থানিয়রা।
পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার পূর্বে সাংবাদিকেরা হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে গোলাম আজম সাংবাদিকদের জানান, আমার নামের সমস্যা। আমার নাম গোলাম আজম হওয়ায় কোথাও চাকুরী হয়নি। সবখানেই নাম পরিবর্তন করতে বলেন, বিষয়টি আমার বাবাকে বারবার জানালেও তিনি আমার নাম পরিবর্তন করতে দেননি। রাজশাহীতে ছাত্র থাকা অবস্থায় নামের কারনে ২ বার জেল হাজতেও যেতে হয়েছে আমাকে। আমি সুস্থ, আমাকে মানুষিক রোগী বানিয়ে বিভিন্ন অত্যাচার ও নির্যাতন করা হয়েছে।
আমি মানুষিক রোগী নয়, বিষয়টি বারবার বোঝানোর চেষ্টা করলেও আমার বাবা গুরুত্ব দেননি। এ অবস্থায় ৩ মাসের শিশু সন্তানকে নিয়ে আমার স্ত্রী পিত্রালয়ে চলে যায়। সবকিছু মিলিয়ে আমি হতাশাগ্রস্থ হয়ে পরি।
মৃতদেহ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে ঠাকুরগাঁও সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ কামাল হোসেন বলেন, গোলাম আজম নিজেই থানাতে এসে বাবাকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন এবং তার দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাথমিক সুরতহাল রির্পোট অন্তে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাটানো হয় জানিয়ে ওসি আরো বলেন, এব্যাপারে গোলাম আজমের মা রমিশা বানু বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করলে সেই মামলাই গোলাম আজমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে হত্যাকান্ড রহস্য উদর্ঘাটনে কাজ (তদন্ত) শুরু হয়েছে, আশাকরি অতি-দ্রুতই হত্যাকান্ডের বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে বলেও জানান ওসি।